“ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়” রাষ্ট্রনায়কোচিত দৃষ্টিভঙ্গিতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উক্তির বাস্তবায়নের আহ্বান

Share On

“ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়” রাষ্ট্রনায়কোচিত দৃষ্টিভঙ্গিতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উক্তির বাস্তবায়নের আহ্বান।

কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গাজী সাইফুল ইসলাম মিথুন এবং সুইডেন বিএনপির সাবেক যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক এই দর্শনের বাস্তবায়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

“ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়” এই কথাটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান উচ্চারণ করেছিলেন এক গভীর রাষ্ট্রনায়কোচিত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। তাঁর রাজনৈতিক দর্শনে ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে দলীয় আদর্শ এবং তারও ঊর্ধ্বে দেশের কল্যাণকে প্রাধান্য দেওয়ার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠনের সময় তিনি একটি আদর্শভিত্তিক সংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন, যেখানে ব্যক্তি নয়, দলের শৃঙ্খলা ও আদর্শ হবে মুখ্য। এবং দলের ভিতরেও যেন দেশের স্বার্থ সর্বোচ্চ স্থান পায়, সেই মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতেই তিনি এই কথাটি বলেন।

“ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়” এর তাৎপর্য।

ব্যক্তির চেয়ে দল বড়: একজন ব্যক্তির চাওয়া-পাওয়ার চেয়ে একটি দলের আদর্শ ও শৃঙ্খলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

দলের চেয়ে দেশ বড়: কোনো দলের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থ সর্বোচ্চ। দেশের কল্যাণের জন্য প্রয়োজনে দলীয় স্বার্থকেও ত্যাগ করা উচিত।

এই উক্তিটি কেবল উচ্চারণ করার জন্য নয়, এর বাস্তবায়ন দরকার সমাজে, রাজনীতিতে এবং প্রতিটি নাগরিকের মানসিকতায়। গাজী সাইফুল ইসলাম মিথুন তার কিছু চিন্তা চেতনা এবং করণীয় দিক তুলে ধরেছেন।

১. ব্যক্তিস্বার্থ নয়, সম্মিলিত স্বার্থে কাজ করো। সমাজ ও জাতির কল্যাণই প্রকৃত দায়িত্ব।

২. নিজের চাওয়া-পাওয়ার আগে পরিবার, পাড়া, সমাজ ও কর্মস্থলের মঙ্গলের কথা ভাবো। একসাথে এগিয়ে যাওয়াই উন্নয়নের চাবিকাঠি।

৩. অন্যের মতামত ও দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান করো। সম্মান ও সহমর্মিতা গঠনমূলক পরিবেশ তৈরি করে।

৪. রাজনীতিতে দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দাও। দলীয় চিন্তার ঊর্ধ্বে উঠে দেশের উন্নয়নের কথা ভাবো।

৫. দলীয় সিদ্ধান্তে যেন দেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করো। দেশপ্রেম মানে দেশের ক্ষতি না করা।

৬. ভোট দাও বিচার-বিবেচনা করে, দেশের দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণকে গুরুত্ব দিয়ে। আবেগ নয়, যুক্তি দিয়ে ভোট দাও।

৭. একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করো। সচেতনতা থেকেই জন্ম নেয় দায়িত্ববোধ।

৮. আইন মেনে চলো, কর প্রদান করো, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নাও, এই সবই দেশপ্রেমের অংশ।

৯. শুধু নিজের নয়, সমাজের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখো। নিজেকে ছাড়িয়ে আশপাশকে বদলাও।

১০. শিক্ষা ও সচেতনতার প্রসারে কাজ করো। শিক্ষাই সমাজকে আলোকিত করে।

১১. শিশুদের শেখাও যে তারা শুধু ব্যক্তিগত নয়, জাতীয় জীবনেরও অংশ। তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের বীজ বপন করো।

১২. স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এই নীতির প্রচার করো। যেখানেই সম্ভব, দেশের কথা ছড়িয়ে দাও।

১৩. সংগঠন গড়ে তুললে তা যেন নীতিনিষ্ঠ ও মূল্যবোধসম্পন্ন হয়। সংগঠন হোক আদর্শের বাহক, ব্যক্তি বন্দনার নয়।

১৪. ব্যক্তিপূজার পরিবর্তে আদর্শকে গুরুত্ব দাও। ব্যক্তি ক্ষণস্থায়ী, আদর্শ চিরস্থায়ী।

১৫. দল গঠন করো দেশের সেবা করার জন্য, ক্ষমতা দখলের জন্য নয়। রাজনীতি হোক জনগণের কল্যাণে উৎসর্গিত।

গাজী সাইফুল ইসলাম মিথুন আরো বলেন, এই দর্শনের বাস্তবায়ন শুরু হয় নিজেকে বদলানো থেকে। প্রতিদিনের ছোট ছোট সিদ্ধান্তে যদি আমরা দেশের কথা ভাবি, তাহলে একদিন বড় পরিবর্তন অবশ্যই আসবে।

শেষ কথা, “ব্যক্তি, দল, দেশ” এই শ্রেণিবিন্যাস কেবল একটি স্লোগান নয়, বরং একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি।

আসুন, আমরা রাজনীতি করি সেবা করার জন্য, সমাজে ন্যায়, সাম্য ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য। শাসন করার জন্য নয়, বিভক্তি সৃষ্টির জন্য নয়, ঐক্য গঠনের জন্য। ক্ষমতা অর্জনের জন্য নয়, মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য।

“তুমি যদি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, তুমি যদি রুখে দাঁড়াও, তবেই তুমি বাংলাদেশ।”

আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করি।

নিউজ ডেস্ক, সেন্ট্রাল বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *